শসা এর ঔষধি গুণাগুণ

শসা (Cucumis sativus) গোর্ড পরিবার কিউকারবিটাসের অন্তর্গত একটি অতি পরিচিত উদ্ভিদ। শসা এক প্রকারের ফল। লতানো উদ্ভিদে জন্মানো ফলটি লম্বাটে আকৃতির এবং প্রায় ১০-১২ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। এর বাইরের রঙ সবুজ। তবে পাকলে হলুদ হয়। ভেতরে সাদাটে সবুজ রঙের হয়, এবং মধ্যভাগে বিচি থাকে। এটি কাঁচা খাওয়া হয় বা সালাদ তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। এর উৎপত্তি ভারতবর্ষে হলেও বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব জায়গাতেই জন্মে। এটি সাধারণতঃ গরমের সময় বেশি পাওয়া যায়। বেশ কয়েক জাতের শসা রয়েছে। শশা এক রকমের ফল । এটা দেখতে সবুজ রঙের লম্বা আকারের হয়ে থাকে । এই ফলে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে এবং জলের পরিমাণ বেশী থাকে । খোসা সহ একটি কাচা শশা'র প্রতি ১০০ গ্রামে ক্যালরীর পরিমাণ ২০ কিলো ক্যালরী। বাংলাদেশে শশা প্রধাণত সালাদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শশাকে যতোই সাদাসিধে মনে হোক না কেন খাদ্যগুণ বিচারে এটি অনন্য। শশার জলীয় অংশ শতকরা ৯৫ভাগ। এটি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং শরীরের ভেতরের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে ও শরীর শীতল রাখতে সহায়তা করে। শশায় ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। প্রতি ১০০ গ্রামে আছে মাত্র ১৫ ক্যালরি। এতে কোনো সম্পৃক্ত চর্বি বা কোলেস্টেরল নেই। সাদাসিধে এই শশার খোসার গুণও খুব একটা কম নয়। খোসাসহ শশা খাবার অভ্যাস আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য কে কমিয়ে দেবে অনেকখানি এবং আপনার অন্ত্র থেকে দেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান বের করে দিয়ে অন্ত্রের ক্যান্সারের মত রোগ থেকে আপনাকে দেবে সুরক্ষা। শশায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পটাশিয়াম আছে। এই পটাশিয়ামকে বিশেষজ্ঞরা হৃদযন্ত্রের বন্ধু বলে থাকেন। কারণ এটি রক্তচাপ কমিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শশায় পানি এবং পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় এটি কিছুটা প্রস্রাব বৃদ্ধি করে,ফলে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে। এছাড়া নিয়মিত শশা খেলে দেহের ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রনে থাকে,ফলে কিডনি ও মূত্রথলিতে পাথর হবার সম্ভাবনা হ্রাস পায়। শশায় বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, লুটেইন প্রভৃতি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরের সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। শরীরে উৎপন্ন হওয়া ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেলগুলো থেকে শরীরকে সুরক্ষিত রাখে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো। তারুণ্য ধরে রাখতে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর জুড়ি নেই। এছাড়াও শশায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে। ভিটামিন কে আমাদের দেহের হাড়গুলোকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় আলঝেইমার ডিজিজ এর মত স্নায়ু রোগ প্রতিরোধে শশা ভূমিকা রাখে বলে সম্প্রতি বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন। সৌন্দর্য চর্চায়ও শশার রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা। ত্বকের নানাবিধ সমস্যা, চোখের চারপাশের ফোলাভাব,কালো দাগ দুর করে ত্বককে প্রাণবন্ত ও সজীব করে তোলে শশা। তাই নানারকম গুণে সমৃদ্ধ এই শশাকে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় স্থান করে দিতে ভুলবেন না।